ক্ষমতা এবং সিদ্ধান্থহীনতায় বাংলাদেশের নির্বাচন
'ক্ষমতা এবং সিদ্ধান্থহীনতায় বাংলাদেশের নির্বাচন'
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এরশাদ পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে, নতুন সংকট দেখা দিয়ে ছিল উনি কার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন । ক্ষমতা গ্রহনের জন্য রাজনৈতিক দল গুলোর কাছে গ্রহন যোগ্য ১ জন ব্যক্তির প্রয়োজন ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে বড় ২ দল কোন মতেই ঐক্য মতে পৌঁছিতে পারে নাই । বহু আলোচনার পরে এই মর্মে সিন্ধান্ত হয় সুপ্রীম কোর্টের রায় যেহেতু সকলের কাছেই ইচ্ছায়/অনিচ্ছায় গ্রহন যোগ্য হওয়ায়, তখনকার প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন সাহেবের রাস্ট্র পতির ক্ষমতা গ্রহনের ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌঁছে । রাজনৈতিক দলগুলোর অনুরোধে সাহাবুদ্দিন সাহেব রাজী হন কিন্তু শর্ত ছিল নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পরে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পুনরায় প্রধান বিচারপতি পদে ফিরে যাবেন। সকল রাজনৈতিক দলই তা গ্রহন করেন ।এরশাদের কাছ থেকে ক্ষমতা গ্রহন, নির্বাচন,নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, প্রধান বিচার পতি পদে ফিরে যাওয়া সবকিছুই সম্পন্ন হয় । স্বল্প মেয়াদী সুফল মেলে, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সাহাবুদ্দিন সাহেব একজন সি –এস- পি অফিসার ছিলেন এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসাবে কাজও করেছেন । পাকিস্তান আমলে ১ টি নিয়ম ছিল যদি কোন সি- এস- পি অফিসারের প্রশাসন চালানো সন্তোষ জনক প্রতীয় মান না হলে, তাদেরকে বিচার বিভাগে বদলী করা হত। অল্প কিছু অফিসারকে প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগে বদলী করা হয় , তন্মধ্যে সাহাবুদ্দিন সাহেব অন্যতম। উনার আর্থিক সততা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের সাথে জড়িত না থাকা প্রসংশীয়, যা সচরাচর দেখা যায় না। রাস্ট্র পতির ক্ষমতা গ্রহনের পরে বিচার বিভাগে ফিরে যাওয়া Conflict of interest এ পড়ে যদিও তার সরকারের আমলের মামলা গুলোর শুনানীতে অংশ গ্রহন থেকে বিরত ছিলেন। ১৯৯০ সনে আওয়ামী লীগ ও বি এন পির সখ্যতা ছিল, পাশা পাশি ২ বাড়ীর মালিক একে অপরের ছায়া মাড়ানোর মত সম্পর্ক না থাকলেও, অগ্নিকান্ড থেকে রক্ষার জন্য সৌহার্দ পূর্ন সম্পর্ক বজায় রাখে । আগুন নিভানো শেষ হলেই সম্পর্ক আগের অবস্থায় ফিরে যায়। আওয়ামী লীগ ও বি এন পি একই অবস্থা । পরবর্তিতে নির্বাচন কালীন তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করা হয় সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচার পতিকে প্রধান করে । ২০০১ সনে বি এন পি ক্ষমতায় এসেই কে এম হাসানকে পরবর্তি নির্বাচন কালীন সরকার প্রধান করার জন্য চাকুরী করার বয়স সীমা বৃদ্ধি করায় তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তীব্র বিতর্কিত হয়ে পড়ে । ১৯৯০ সনের পরে আওয়ামী লীগ ও বি এন পি উভয়েই তাদের ক্ষমতাকালীন সময়ে উচ্চতর আদালতের বিচারপতি নিয়োগে দলীয় বিবেচনা প্রাধন্য দেয় এবং নির্বাচন কালীন সময়ে সরকার ব্যবস্থাকে চিন্তা করে অনিয়মের মাত্রা বৃদ্ধি পায় । বিচার বিভাগ এত টাই দলীয় করন করা হয়েছে যা সামরিক শাসক আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, জিয়াউর রহমান এমনকি স্বৈরাচার খ্যাত এরশাদও করে নাই ।প্রথমে বি এন পি তত্তাবধায়ক ব্যবস্থাকে অর্দ্ধ মৃত করে ফেলে এবং পরবর্তিতে আওয়ামী লীগ পুরাপুরি মৃত করে ফেলে । প্রথমত প্রধান বিচার পতি এবং পরবর্তিতে সাম্প্রতিক সময়ে অবসর প্রাপ্ত প্রধান বিচার পতিকে প্রধান করে নির্বাচন কালীন সরকার ব্যবস্থা সূচনা এবং শেষ সবই সম্পন্ন হয়েছে । আউট পুট হিসাবে রয়ে গেছে শুধু বিচার বিভাগের দলীয় করন, যা পুরো জাতিকে বহন করতে হচ্ছে । নির্বাচন কালীন সময়ে বিচার বিভাগকে জড়ানো ভুল সিদ্ধান্ত ছিল । এই সিদ্ধান্তের সাথে জড়িত রাজনীতি বিদ বিশেষ করে বড় ২ দল, তখন কার প্রধান বিচার পতি ও বুদ্ধীজিবীরা এর দায়িত্বএড়াতে পারে না। দেশের রাজনীতি বিদ/ বিচার বিভাগের কেউ( অবসরপ্রাপ্ত) বিশেষ ভাবে কোন বুদ্ধিজীবি বা পাঠকের মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম ।
আমাদের সাথে যুক্ত হোনঃ
ফেসবুক - Darpone Amra - Facebook
ইউটিউব - Darpone Amra - YouTube
ব্লগার - Dapone Amra - Blogger
No comments